Rabindranath Tagore Archives - প্রিয় পাঠক https://priyopathok.com/product-category/rabindranath-tagore/ Wed, 04 May 2022 16:44:25 +0000 en-US hourly 1 https://wordpress.org/?v=6.5.2 https://priyopathok.com/wp-content/uploads/2022/04/cropped-Priyo-Pathok-PP-with-Shadow-32x32.png Rabindranath Tagore Archives - প্রিয় পাঠক https://priyopathok.com/product-category/rabindranath-tagore/ 32 32 চোখের বালি https://priyopathok.com/product/%e0%a6%9a%e0%a7%8b%e0%a6%96%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%bf-106/ Wed, 04 May 2022 16:43:54 +0000 https://priyopathok.com/?post_type=product&p=7849 আমার সাহিত্যের পথযাত্রা পূর্বাপর অনুসরণ করে দেখলে ধরা পড়বে যে ‘চোখের বালি’ উপন্যাসটা আকস্মিক, কেবল আমার মধ্যে নয়, সেদিনকার বাংলা সাহিত্যক্ষেত্রে। বাইরে থেকে কোন ইশারা এসেছিল আমার মনে, সে প্রশ্নটা দুরূহ। সব চেয়ে সহজ জবাব হচ্ছে ধারাবাহিক লম্বা গল্পের উপর মাসিক পত্রের চিরকেলে দাবি নিয়ে। বঙ্গদর্শনের নবদর্শনের নবপর্যায় বের করলেন শ্রীশচন্দ্র। আমার নাম যোজনা করা হল, তাতে আমার প্রসন্ন মনের সমর্থন ছিল না। কোনো পূর্বতন খ্যাতির উত্তরাধিকার গ্রহণ করা সংকটের অবস্থা, আমার মনে এ সম্বন্ধে যথেষ্ট সংকোচ ছিল। কিন্তু আমার মনে উপরোধ-অনুরোধের দ্বন্দ্ব যেখানেই ঘটেছে সেখানে প্রায়ই আমি জয়লাভ করতে পারি নি, এবারেও তাই হল।

আমরা একদা বঙ্গদর্শনে বিষবৃক্ষ উপন্যাসের রস সম্ভোগ করেছি। তখনকার দিনে সে রস ছিল নতুন। পরে সেই বঙ্গদর্শনকে নবপর্যায়ে টেনে আনা যেতে পারে কিন্তু সেই প্রথম পালার পুনরাবৃত্তি হতে পারে না। সেদিনের আসর ভেঙে গেছে, নতুন সম্পাদককে রাস্তার মোড় ফেরাতেই হবে। সহ-সম্পাদক শৈলেশের বিশ্বাসছিল, আমি এই মাসিকের বর্ষব্যাপী ভোজে গল্পের পুরো পরিমাণ জোগান দিতে পারি। অতএব কোমর বাঁধতে হবে আমাকে। এ যেন মাসিকের দেওয়ানি আইন-অনুসারে সম্পাদকের কাছ থেকে উপযুক্ত খোরপোশের দাবি করা। বস্তুত ফরমাশ এসেছিল বাইরে থেকে। এর পূর্বে মাহাকায় গল্প সৃষ্টিতে হাত দিই ন।ি ছোটো গল্পের উল্কাবৃদ্ধি করেছি। ঠিক করতে হল, এবারকার গল্প বানাতে হবে এ যুগের কারখানা-ঘরে। শয়তানের হাতে বিষবৃক্ষের চাষ তখনো হত এখনো হয়, তবে কিনা তার ক্ষেত্র আলাদা, অন্তত গল্পের এলাকার মধ্যে। এখনকার ছবি খুব স্পষ্ট, সাজসজ্জায় অলংকারে তাকে আচ্ছন্ন করলে তাকে ঝাপসা করে দেওয়া হয়, তার আধুনিক স্বভাব হয় নষ্ট। তাই গল্পের অবদান যখন এড়াতে পারলুম না তখন নামতে হল মনের সংসারের সেই কারখানা-ঘরে যেখানে আগুনের জ্বলুনি হাতুড়ির পিটুনি থেকে দৃঢ় ধাতুর মূর্তি জেগে উঠতে থাকে। মানববিধাতার এই নির্মম সৃষ্টিপ্রক্রিয়ার বিবরণ তার পূর্বে গল্প অবলম্বন করে বাংলা ভাষার আর প্রকাশ পায় নি। তার পরে এই পর্দার বাইরেকার সদর রাস্তাতেই ক্রমে ক্রমে দেখা দিয়েছে গোরা, ঘরে বাইরে, চতুরঙ্গ। শুধু তাই নয়, ছোটো গল্পের পরিকল্পনায় আমার লেখনী সংসারের রূঢ় স্পর্শ এড়িয়ে যায় নি। নষ্টনীড় বা শাস্তি, এরা নির্মম সাহিত্যের পর্যায়েই পড়বে। তার পরে পলাতকার কবিতাগুলির মধ্যেও সংসারের সঙ্গে সেই মোকাবিলার আলাপ চলেছে। বঙ্গদর্শনের নবপর্যায় এক দিকে তখন আমার মনকে রাষ্ট্রনৈতিক সমাজনৈতিক চিন্তার অবর্তে টেনে এনেছিল, আর-এক দিকে এনেছিল গল্পে, এমন কি কাব্যেও, মানবচরিত্রের কঠিন সংস্পর্শে। অল্পে অল্পে এর শুরু হয়েছিল সাধানার যুগেই, তার পরে সবুজপত্র পসরা জমিয়েছিল। চোখের বালির গল্পকে ভিতর থেকে ধাক্কা দিয়ে দারুণ করে তুলেছে মায়ের ঈর্ষা। এই ঈর্ষা মহেন্দ্রের সেই রিপুকে কুৎসিত অবকাশ দিয়েছে যা সহজ অবস্থায় এমন করে দাঁত নখ বের করত না। যেন পশুশালার দরজা খুলে দেওয়া হল, বেরিয়ে পড়ল সিংস্র ঘটনাগুলো অসংযত হয়ে। সাহিত্যের নবপর্যায়ের পদ্দতি হচ্ছে ঘটনাপরস্পরার বিবরণ দেওয়া নয়, বিশ্লেষণ করে তাদের আঁতের কথা বের করে দেখানো। সেই পদ্ধতিই দেখা দিল চোখে বালিতে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

The post চোখের বালি appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
আমার সাহিত্যের পথযাত্রা পূর্বাপর অনুসরণ করে দেখলে ধরা পড়বে যে ‘চোখের বালি’ উপন্যাসটা আকস্মিক, কেবল আমার মধ্যে নয়, সেদিনকার বাংলা সাহিত্যক্ষেত্রে। বাইরে থেকে কোন ইশারা এসেছিল আমার মনে, সে প্রশ্নটা দুরূহ। সব চেয়ে সহজ জবাব হচ্ছে ধারাবাহিক লম্বা গল্পের উপর মাসিক পত্রের চিরকেলে দাবি নিয়ে। বঙ্গদর্শনের নবদর্শনের নবপর্যায় বের করলেন শ্রীশচন্দ্র। আমার নাম যোজনা করা হল, তাতে আমার প্রসন্ন মনের সমর্থন ছিল না। কোনো পূর্বতন খ্যাতির উত্তরাধিকার গ্রহণ করা সংকটের অবস্থা, আমার মনে এ সম্বন্ধে যথেষ্ট সংকোচ ছিল। কিন্তু আমার মনে উপরোধ-অনুরোধের দ্বন্দ্ব যেখানেই ঘটেছে সেখানে প্রায়ই আমি জয়লাভ করতে পারি নি, এবারেও তাই হল।

আমরা একদা বঙ্গদর্শনে বিষবৃক্ষ উপন্যাসের রস সম্ভোগ করেছি। তখনকার দিনে সে রস ছিল নতুন। পরে সেই বঙ্গদর্শনকে নবপর্যায়ে টেনে আনা যেতে পারে কিন্তু সেই প্রথম পালার পুনরাবৃত্তি হতে পারে না। সেদিনের আসর ভেঙে গেছে, নতুন সম্পাদককে রাস্তার মোড় ফেরাতেই হবে। সহ-সম্পাদক শৈলেশের বিশ্বাসছিল, আমি এই মাসিকের বর্ষব্যাপী ভোজে গল্পের পুরো পরিমাণ জোগান দিতে পারি। অতএব কোমর বাঁধতে হবে আমাকে। এ যেন মাসিকের দেওয়ানি আইন-অনুসারে সম্পাদকের কাছ থেকে উপযুক্ত খোরপোশের দাবি করা। বস্তুত ফরমাশ এসেছিল বাইরে থেকে। এর পূর্বে মাহাকায় গল্প সৃষ্টিতে হাত দিই ন।ি ছোটো গল্পের উল্কাবৃদ্ধি করেছি। ঠিক করতে হল, এবারকার গল্প বানাতে হবে এ যুগের কারখানা-ঘরে। শয়তানের হাতে বিষবৃক্ষের চাষ তখনো হত এখনো হয়, তবে কিনা তার ক্ষেত্র আলাদা, অন্তত গল্পের এলাকার মধ্যে। এখনকার ছবি খুব স্পষ্ট, সাজসজ্জায় অলংকারে তাকে আচ্ছন্ন করলে তাকে ঝাপসা করে দেওয়া হয়, তার আধুনিক স্বভাব হয় নষ্ট। তাই গল্পের অবদান যখন এড়াতে পারলুম না তখন নামতে হল মনের সংসারের সেই কারখানা-ঘরে যেখানে আগুনের জ্বলুনি হাতুড়ির পিটুনি থেকে দৃঢ় ধাতুর মূর্তি জেগে উঠতে থাকে। মানববিধাতার এই নির্মম সৃষ্টিপ্রক্রিয়ার বিবরণ তার পূর্বে গল্প অবলম্বন করে বাংলা ভাষার আর প্রকাশ পায় নি। তার পরে এই পর্দার বাইরেকার সদর রাস্তাতেই ক্রমে ক্রমে দেখা দিয়েছে গোরা, ঘরে বাইরে, চতুরঙ্গ। শুধু তাই নয়, ছোটো গল্পের পরিকল্পনায় আমার লেখনী সংসারের রূঢ় স্পর্শ এড়িয়ে যায় নি। নষ্টনীড় বা শাস্তি, এরা নির্মম সাহিত্যের পর্যায়েই পড়বে। তার পরে পলাতকার কবিতাগুলির মধ্যেও সংসারের সঙ্গে সেই মোকাবিলার আলাপ চলেছে। বঙ্গদর্শনের নবপর্যায় এক দিকে তখন আমার মনকে রাষ্ট্রনৈতিক সমাজনৈতিক চিন্তার অবর্তে টেনে এনেছিল, আর-এক দিকে এনেছিল গল্পে, এমন কি কাব্যেও, মানবচরিত্রের কঠিন সংস্পর্শে। অল্পে অল্পে এর শুরু হয়েছিল সাধানার যুগেই, তার পরে সবুজপত্র পসরা জমিয়েছিল। চোখের বালির গল্পকে ভিতর থেকে ধাক্কা দিয়ে দারুণ করে তুলেছে মায়ের ঈর্ষা। এই ঈর্ষা মহেন্দ্রের সেই রিপুকে কুৎসিত অবকাশ দিয়েছে যা সহজ অবস্থায় এমন করে দাঁত নখ বের করত না। যেন পশুশালার দরজা খুলে দেওয়া হল, বেরিয়ে পড়ল সিংস্র ঘটনাগুলো অসংযত হয়ে। সাহিত্যের নবপর্যায়ের পদ্দতি হচ্ছে ঘটনাপরস্পরার বিবরণ দেওয়া নয়, বিশ্লেষণ করে তাদের আঁতের কথা বের করে দেখানো। সেই পদ্ধতিই দেখা দিল চোখে বালিতে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

The post চোখের বালি appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
শেষের কবিতা https://priyopathok.com/product/%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b7%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be-106/ Wed, 04 May 2022 16:43:54 +0000 https://priyopathok.com/?post_type=product&p=7850 শেষের কবিতা বিংশ শতকের বাংলার নবশিক্ষিত অভিজাত সমাজের জীবনকথা। ব্যক্তি মানুষের মূল্যচেতনার উপাদান যদি অন্তর থেকে শুধুই বার হয়ে আসতে থাকে - যার সমুন্নতি ও দীপ্তি বিদ্যার বৃহৎ পরিমার্জনায়, তারও একটা চরিত্র আছে। বাস্তব চেনাশোনার চলা বাহ্যিক অভিজ্ঞতার জগৎ থেকে তা একেবারে অন্তর অভিমুখী। এই নবতর চেতনার অদ্ভুত আবিষ্কার এই উপন্যাস রচনার কাছাকাছি সময়ে। রবীন্দ্রনাথের অঙ্কিত এই পর্বের দু-একটি মুখাবয়বে কল্পনার প্রাধান্য লক্ষণীয়।

লেখা ও প্রকাশের দিক থেকে শেষের কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দশম উপন্যাস। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এটি লেখেন ১৯২৮ সালে ব্যাঙ্গালোরে, স্বাস্থ্য উদ্ধারের প্রয়াসে সেখানে থাকবার সময়ে। শেষের কবিতা প্রথ ম প্রকাশিত হয় প্রবাসী’তে, ধারাবাহিকভাবে ভাদ্র থেকে চৈত্র পর্যন্ত। অনেকে একে কবিতার বই ভেবে ভুল করে। আদতে এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম রোমান্টিক উপন্যাস ।

The post শেষের কবিতা appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
শেষের কবিতা বিংশ শতকের বাংলার নবশিক্ষিত অভিজাত সমাজের জীবনকথা। ব্যক্তি মানুষের মূল্যচেতনার উপাদান যদি অন্তর থেকে শুধুই বার হয়ে আসতে থাকে – যার সমুন্নতি ও দীপ্তি বিদ্যার বৃহৎ পরিমার্জনায়, তারও একটা চরিত্র আছে। বাস্তব চেনাশোনার চলা বাহ্যিক অভিজ্ঞতার জগৎ থেকে তা একেবারে অন্তর অভিমুখী। এই নবতর চেতনার অদ্ভুত আবিষ্কার এই উপন্যাস রচনার কাছাকাছি সময়ে। রবীন্দ্রনাথের অঙ্কিত এই পর্বের দু-একটি মুখাবয়বে কল্পনার প্রাধান্য লক্ষণীয়।

লেখা ও প্রকাশের দিক থেকে শেষের কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দশম উপন্যাস। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এটি লেখেন ১৯২৮ সালে ব্যাঙ্গালোরে, স্বাস্থ্য উদ্ধারের প্রয়াসে সেখানে থাকবার সময়ে। শেষের কবিতা প্রথ ম প্রকাশিত হয় প্রবাসী’তে, ধারাবাহিকভাবে ভাদ্র থেকে চৈত্র পর্যন্ত। অনেকে একে কবিতার বই ভেবে ভুল করে। আদতে এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম রোমান্টিক উপন্যাস ।

The post শেষের কবিতা appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
নৌকাডুবি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর https://priyopathok.com/product/%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a7%97%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a1%e0%a7%81%e0%a6%ac%e0%a6%bf-%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a7%80%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%a5-%e0%a6%a0-106/ Wed, 04 May 2022 16:43:54 +0000 https://priyopathok.com/?post_type=product&p=7843 নৌকাডুবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তেরোটি উপন্যাসের মধ্যে চতুর্থ উপন্যাস। ১৩১০-১১ বঙ্গাব্দে 'বঙ্গদর্শন' পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়। নৌকাডুবি উপন্যাসটি লেখা হয়েছে জটিল পারিবারিক সমস্যাগুলিকে কেন্দ্র করে। ঘরানার দিক থেকে নৌকাডুবি রোমান্টিক ধাঁচের উপন্যাস। চিরায়ত সামাজিক উপন্যাসও বলা হয়ে থাকে। সামাজিক অসঙ্গতি, কুসংস্কার, দৃষ্টিভঙ্গি এর পরিবর্তে গল্পের উপজীব্য ছিলো ভাগ্যচক্র আর নিয়তির খেলা। মনের কুটিলতা, ষড়যন্ত্র, হিংসা-বিদ্বেষ এর জায়গায় ফুটে উঠেছে মানব-মানবী মনের আদিম এবং সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলো।

The post নৌকাডুবি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
নৌকাডুবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তেরোটি উপন্যাসের মধ্যে চতুর্থ উপন্যাস। ১৩১০-১১ বঙ্গাব্দে ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়। নৌকাডুবি উপন্যাসটি লেখা হয়েছে জটিল পারিবারিক সমস্যাগুলিকে কেন্দ্র করে। ঘরানার দিক থেকে নৌকাডুবি রোমান্টিক ধাঁচের উপন্যাস। চিরায়ত সামাজিক উপন্যাসও বলা হয়ে থাকে। সামাজিক অসঙ্গতি, কুসংস্কার, দৃষ্টিভঙ্গি এর পরিবর্তে গল্পের উপজীব্য ছিলো ভাগ্যচক্র আর নিয়তির খেলা। মনের কুটিলতা, ষড়যন্ত্র, হিংসা-বিদ্বেষ এর জায়গায় ফুটে উঠেছে মানব-মানবী মনের আদিম এবং সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলো।

The post নৌকাডুবি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
নৌকাডুবি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর https://priyopathok.com/product/%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a7%97%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a1%e0%a7%81%e0%a6%ac%e0%a6%bf-%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a7%80%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%a5-%e0%a6%a0-105/ Wed, 04 May 2022 16:42:58 +0000 https://priyopathok.com/?post_type=product&p=7774 নৌকাডুবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তেরোটি উপন্যাসের মধ্যে চতুর্থ উপন্যাস। ১৩১০-১১ বঙ্গাব্দে 'বঙ্গদর্শন' পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়। নৌকাডুবি উপন্যাসটি লেখা হয়েছে জটিল পারিবারিক সমস্যাগুলিকে কেন্দ্র করে। ঘরানার দিক থেকে নৌকাডুবি রোমান্টিক ধাঁচের উপন্যাস। চিরায়ত সামাজিক উপন্যাসও বলা হয়ে থাকে। সামাজিক অসঙ্গতি, কুসংস্কার, দৃষ্টিভঙ্গি এর পরিবর্তে গল্পের উপজীব্য ছিলো ভাগ্যচক্র আর নিয়তির খেলা। মনের কুটিলতা, ষড়যন্ত্র, হিংসা-বিদ্বেষ এর জায়গায় ফুটে উঠেছে মানব-মানবী মনের আদিম এবং সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলো।

The post নৌকাডুবি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
নৌকাডুবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তেরোটি উপন্যাসের মধ্যে চতুর্থ উপন্যাস। ১৩১০-১১ বঙ্গাব্দে ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়। নৌকাডুবি উপন্যাসটি লেখা হয়েছে জটিল পারিবারিক সমস্যাগুলিকে কেন্দ্র করে। ঘরানার দিক থেকে নৌকাডুবি রোমান্টিক ধাঁচের উপন্যাস। চিরায়ত সামাজিক উপন্যাসও বলা হয়ে থাকে। সামাজিক অসঙ্গতি, কুসংস্কার, দৃষ্টিভঙ্গি এর পরিবর্তে গল্পের উপজীব্য ছিলো ভাগ্যচক্র আর নিয়তির খেলা। মনের কুটিলতা, ষড়যন্ত্র, হিংসা-বিদ্বেষ এর জায়গায় ফুটে উঠেছে মানব-মানবী মনের আদিম এবং সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলো।

The post নৌকাডুবি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
চোখের বালি https://priyopathok.com/product/%e0%a6%9a%e0%a7%8b%e0%a6%96%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%bf-105/ Wed, 04 May 2022 16:42:58 +0000 https://priyopathok.com/?post_type=product&p=7780 আমার সাহিত্যের পথযাত্রা পূর্বাপর অনুসরণ করে দেখলে ধরা পড়বে যে ‘চোখের বালি’ উপন্যাসটা আকস্মিক, কেবল আমার মধ্যে নয়, সেদিনকার বাংলা সাহিত্যক্ষেত্রে। বাইরে থেকে কোন ইশারা এসেছিল আমার মনে, সে প্রশ্নটা দুরূহ। সব চেয়ে সহজ জবাব হচ্ছে ধারাবাহিক লম্বা গল্পের উপর মাসিক পত্রের চিরকেলে দাবি নিয়ে। বঙ্গদর্শনের নবদর্শনের নবপর্যায় বের করলেন শ্রীশচন্দ্র। আমার নাম যোজনা করা হল, তাতে আমার প্রসন্ন মনের সমর্থন ছিল না। কোনো পূর্বতন খ্যাতির উত্তরাধিকার গ্রহণ করা সংকটের অবস্থা, আমার মনে এ সম্বন্ধে যথেষ্ট সংকোচ ছিল। কিন্তু আমার মনে উপরোধ-অনুরোধের দ্বন্দ্ব যেখানেই ঘটেছে সেখানে প্রায়ই আমি জয়লাভ করতে পারি নি, এবারেও তাই হল।

আমরা একদা বঙ্গদর্শনে বিষবৃক্ষ উপন্যাসের রস সম্ভোগ করেছি। তখনকার দিনে সে রস ছিল নতুন। পরে সেই বঙ্গদর্শনকে নবপর্যায়ে টেনে আনা যেতে পারে কিন্তু সেই প্রথম পালার পুনরাবৃত্তি হতে পারে না। সেদিনের আসর ভেঙে গেছে, নতুন সম্পাদককে রাস্তার মোড় ফেরাতেই হবে। সহ-সম্পাদক শৈলেশের বিশ্বাসছিল, আমি এই মাসিকের বর্ষব্যাপী ভোজে গল্পের পুরো পরিমাণ জোগান দিতে পারি। অতএব কোমর বাঁধতে হবে আমাকে। এ যেন মাসিকের দেওয়ানি আইন-অনুসারে সম্পাদকের কাছ থেকে উপযুক্ত খোরপোশের দাবি করা। বস্তুত ফরমাশ এসেছিল বাইরে থেকে। এর পূর্বে মাহাকায় গল্প সৃষ্টিতে হাত দিই ন।ি ছোটো গল্পের উল্কাবৃদ্ধি করেছি। ঠিক করতে হল, এবারকার গল্প বানাতে হবে এ যুগের কারখানা-ঘরে। শয়তানের হাতে বিষবৃক্ষের চাষ তখনো হত এখনো হয়, তবে কিনা তার ক্ষেত্র আলাদা, অন্তত গল্পের এলাকার মধ্যে। এখনকার ছবি খুব স্পষ্ট, সাজসজ্জায় অলংকারে তাকে আচ্ছন্ন করলে তাকে ঝাপসা করে দেওয়া হয়, তার আধুনিক স্বভাব হয় নষ্ট। তাই গল্পের অবদান যখন এড়াতে পারলুম না তখন নামতে হল মনের সংসারের সেই কারখানা-ঘরে যেখানে আগুনের জ্বলুনি হাতুড়ির পিটুনি থেকে দৃঢ় ধাতুর মূর্তি জেগে উঠতে থাকে। মানববিধাতার এই নির্মম সৃষ্টিপ্রক্রিয়ার বিবরণ তার পূর্বে গল্প অবলম্বন করে বাংলা ভাষার আর প্রকাশ পায় নি। তার পরে এই পর্দার বাইরেকার সদর রাস্তাতেই ক্রমে ক্রমে দেখা দিয়েছে গোরা, ঘরে বাইরে, চতুরঙ্গ। শুধু তাই নয়, ছোটো গল্পের পরিকল্পনায় আমার লেখনী সংসারের রূঢ় স্পর্শ এড়িয়ে যায় নি। নষ্টনীড় বা শাস্তি, এরা নির্মম সাহিত্যের পর্যায়েই পড়বে। তার পরে পলাতকার কবিতাগুলির মধ্যেও সংসারের সঙ্গে সেই মোকাবিলার আলাপ চলেছে। বঙ্গদর্শনের নবপর্যায় এক দিকে তখন আমার মনকে রাষ্ট্রনৈতিক সমাজনৈতিক চিন্তার অবর্তে টেনে এনেছিল, আর-এক দিকে এনেছিল গল্পে, এমন কি কাব্যেও, মানবচরিত্রের কঠিন সংস্পর্শে। অল্পে অল্পে এর শুরু হয়েছিল সাধানার যুগেই, তার পরে সবুজপত্র পসরা জমিয়েছিল। চোখের বালির গল্পকে ভিতর থেকে ধাক্কা দিয়ে দারুণ করে তুলেছে মায়ের ঈর্ষা। এই ঈর্ষা মহেন্দ্রের সেই রিপুকে কুৎসিত অবকাশ দিয়েছে যা সহজ অবস্থায় এমন করে দাঁত নখ বের করত না। যেন পশুশালার দরজা খুলে দেওয়া হল, বেরিয়ে পড়ল সিংস্র ঘটনাগুলো অসংযত হয়ে। সাহিত্যের নবপর্যায়ের পদ্দতি হচ্ছে ঘটনাপরস্পরার বিবরণ দেওয়া নয়, বিশ্লেষণ করে তাদের আঁতের কথা বের করে দেখানো। সেই পদ্ধতিই দেখা দিল চোখে বালিতে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

The post চোখের বালি appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
আমার সাহিত্যের পথযাত্রা পূর্বাপর অনুসরণ করে দেখলে ধরা পড়বে যে ‘চোখের বালি’ উপন্যাসটা আকস্মিক, কেবল আমার মধ্যে নয়, সেদিনকার বাংলা সাহিত্যক্ষেত্রে। বাইরে থেকে কোন ইশারা এসেছিল আমার মনে, সে প্রশ্নটা দুরূহ। সব চেয়ে সহজ জবাব হচ্ছে ধারাবাহিক লম্বা গল্পের উপর মাসিক পত্রের চিরকেলে দাবি নিয়ে। বঙ্গদর্শনের নবদর্শনের নবপর্যায় বের করলেন শ্রীশচন্দ্র। আমার নাম যোজনা করা হল, তাতে আমার প্রসন্ন মনের সমর্থন ছিল না। কোনো পূর্বতন খ্যাতির উত্তরাধিকার গ্রহণ করা সংকটের অবস্থা, আমার মনে এ সম্বন্ধে যথেষ্ট সংকোচ ছিল। কিন্তু আমার মনে উপরোধ-অনুরোধের দ্বন্দ্ব যেখানেই ঘটেছে সেখানে প্রায়ই আমি জয়লাভ করতে পারি নি, এবারেও তাই হল।

আমরা একদা বঙ্গদর্শনে বিষবৃক্ষ উপন্যাসের রস সম্ভোগ করেছি। তখনকার দিনে সে রস ছিল নতুন। পরে সেই বঙ্গদর্শনকে নবপর্যায়ে টেনে আনা যেতে পারে কিন্তু সেই প্রথম পালার পুনরাবৃত্তি হতে পারে না। সেদিনের আসর ভেঙে গেছে, নতুন সম্পাদককে রাস্তার মোড় ফেরাতেই হবে। সহ-সম্পাদক শৈলেশের বিশ্বাসছিল, আমি এই মাসিকের বর্ষব্যাপী ভোজে গল্পের পুরো পরিমাণ জোগান দিতে পারি। অতএব কোমর বাঁধতে হবে আমাকে। এ যেন মাসিকের দেওয়ানি আইন-অনুসারে সম্পাদকের কাছ থেকে উপযুক্ত খোরপোশের দাবি করা। বস্তুত ফরমাশ এসেছিল বাইরে থেকে। এর পূর্বে মাহাকায় গল্প সৃষ্টিতে হাত দিই ন।ি ছোটো গল্পের উল্কাবৃদ্ধি করেছি। ঠিক করতে হল, এবারকার গল্প বানাতে হবে এ যুগের কারখানা-ঘরে। শয়তানের হাতে বিষবৃক্ষের চাষ তখনো হত এখনো হয়, তবে কিনা তার ক্ষেত্র আলাদা, অন্তত গল্পের এলাকার মধ্যে। এখনকার ছবি খুব স্পষ্ট, সাজসজ্জায় অলংকারে তাকে আচ্ছন্ন করলে তাকে ঝাপসা করে দেওয়া হয়, তার আধুনিক স্বভাব হয় নষ্ট। তাই গল্পের অবদান যখন এড়াতে পারলুম না তখন নামতে হল মনের সংসারের সেই কারখানা-ঘরে যেখানে আগুনের জ্বলুনি হাতুড়ির পিটুনি থেকে দৃঢ় ধাতুর মূর্তি জেগে উঠতে থাকে। মানববিধাতার এই নির্মম সৃষ্টিপ্রক্রিয়ার বিবরণ তার পূর্বে গল্প অবলম্বন করে বাংলা ভাষার আর প্রকাশ পায় নি। তার পরে এই পর্দার বাইরেকার সদর রাস্তাতেই ক্রমে ক্রমে দেখা দিয়েছে গোরা, ঘরে বাইরে, চতুরঙ্গ। শুধু তাই নয়, ছোটো গল্পের পরিকল্পনায় আমার লেখনী সংসারের রূঢ় স্পর্শ এড়িয়ে যায় নি। নষ্টনীড় বা শাস্তি, এরা নির্মম সাহিত্যের পর্যায়েই পড়বে। তার পরে পলাতকার কবিতাগুলির মধ্যেও সংসারের সঙ্গে সেই মোকাবিলার আলাপ চলেছে। বঙ্গদর্শনের নবপর্যায় এক দিকে তখন আমার মনকে রাষ্ট্রনৈতিক সমাজনৈতিক চিন্তার অবর্তে টেনে এনেছিল, আর-এক দিকে এনেছিল গল্পে, এমন কি কাব্যেও, মানবচরিত্রের কঠিন সংস্পর্শে। অল্পে অল্পে এর শুরু হয়েছিল সাধানার যুগেই, তার পরে সবুজপত্র পসরা জমিয়েছিল। চোখের বালির গল্পকে ভিতর থেকে ধাক্কা দিয়ে দারুণ করে তুলেছে মায়ের ঈর্ষা। এই ঈর্ষা মহেন্দ্রের সেই রিপুকে কুৎসিত অবকাশ দিয়েছে যা সহজ অবস্থায় এমন করে দাঁত নখ বের করত না। যেন পশুশালার দরজা খুলে দেওয়া হল, বেরিয়ে পড়ল সিংস্র ঘটনাগুলো অসংযত হয়ে। সাহিত্যের নবপর্যায়ের পদ্দতি হচ্ছে ঘটনাপরস্পরার বিবরণ দেওয়া নয়, বিশ্লেষণ করে তাদের আঁতের কথা বের করে দেখানো। সেই পদ্ধতিই দেখা দিল চোখে বালিতে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

The post চোখের বালি appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
শেষের কবিতা https://priyopathok.com/product/%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b7%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be-105/ Wed, 04 May 2022 16:42:58 +0000 https://priyopathok.com/?post_type=product&p=7781 শেষের কবিতা বিংশ শতকের বাংলার নবশিক্ষিত অভিজাত সমাজের জীবনকথা। ব্যক্তি মানুষের মূল্যচেতনার উপাদান যদি অন্তর থেকে শুধুই বার হয়ে আসতে থাকে - যার সমুন্নতি ও দীপ্তি বিদ্যার বৃহৎ পরিমার্জনায়, তারও একটা চরিত্র আছে। বাস্তব চেনাশোনার চলা বাহ্যিক অভিজ্ঞতার জগৎ থেকে তা একেবারে অন্তর অভিমুখী। এই নবতর চেতনার অদ্ভুত আবিষ্কার এই উপন্যাস রচনার কাছাকাছি সময়ে। রবীন্দ্রনাথের অঙ্কিত এই পর্বের দু-একটি মুখাবয়বে কল্পনার প্রাধান্য লক্ষণীয়।

লেখা ও প্রকাশের দিক থেকে শেষের কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দশম উপন্যাস। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এটি লেখেন ১৯২৮ সালে ব্যাঙ্গালোরে, স্বাস্থ্য উদ্ধারের প্রয়াসে সেখানে থাকবার সময়ে। শেষের কবিতা প্রথ ম প্রকাশিত হয় প্রবাসী’তে, ধারাবাহিকভাবে ভাদ্র থেকে চৈত্র পর্যন্ত। অনেকে একে কবিতার বই ভেবে ভুল করে। আদতে এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম রোমান্টিক উপন্যাস ।

The post শেষের কবিতা appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
শেষের কবিতা বিংশ শতকের বাংলার নবশিক্ষিত অভিজাত সমাজের জীবনকথা। ব্যক্তি মানুষের মূল্যচেতনার উপাদান যদি অন্তর থেকে শুধুই বার হয়ে আসতে থাকে – যার সমুন্নতি ও দীপ্তি বিদ্যার বৃহৎ পরিমার্জনায়, তারও একটা চরিত্র আছে। বাস্তব চেনাশোনার চলা বাহ্যিক অভিজ্ঞতার জগৎ থেকে তা একেবারে অন্তর অভিমুখী। এই নবতর চেতনার অদ্ভুত আবিষ্কার এই উপন্যাস রচনার কাছাকাছি সময়ে। রবীন্দ্রনাথের অঙ্কিত এই পর্বের দু-একটি মুখাবয়বে কল্পনার প্রাধান্য লক্ষণীয়।

লেখা ও প্রকাশের দিক থেকে শেষের কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দশম উপন্যাস। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এটি লেখেন ১৯২৮ সালে ব্যাঙ্গালোরে, স্বাস্থ্য উদ্ধারের প্রয়াসে সেখানে থাকবার সময়ে। শেষের কবিতা প্রথ ম প্রকাশিত হয় প্রবাসী’তে, ধারাবাহিকভাবে ভাদ্র থেকে চৈত্র পর্যন্ত। অনেকে একে কবিতার বই ভেবে ভুল করে। আদতে এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম রোমান্টিক উপন্যাস ।

The post শেষের কবিতা appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
নৌকাডুবি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর https://priyopathok.com/product/%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a7%97%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a1%e0%a7%81%e0%a6%ac%e0%a6%bf-%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a7%80%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%a5-%e0%a6%a0-104/ Wed, 04 May 2022 16:42:19 +0000 https://priyopathok.com/?post_type=product&p=7705 নৌকাডুবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তেরোটি উপন্যাসের মধ্যে চতুর্থ উপন্যাস। ১৩১০-১১ বঙ্গাব্দে 'বঙ্গদর্শন' পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়। নৌকাডুবি উপন্যাসটি লেখা হয়েছে জটিল পারিবারিক সমস্যাগুলিকে কেন্দ্র করে। ঘরানার দিক থেকে নৌকাডুবি রোমান্টিক ধাঁচের উপন্যাস। চিরায়ত সামাজিক উপন্যাসও বলা হয়ে থাকে। সামাজিক অসঙ্গতি, কুসংস্কার, দৃষ্টিভঙ্গি এর পরিবর্তে গল্পের উপজীব্য ছিলো ভাগ্যচক্র আর নিয়তির খেলা। মনের কুটিলতা, ষড়যন্ত্র, হিংসা-বিদ্বেষ এর জায়গায় ফুটে উঠেছে মানব-মানবী মনের আদিম এবং সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলো।

The post নৌকাডুবি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
নৌকাডুবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তেরোটি উপন্যাসের মধ্যে চতুর্থ উপন্যাস। ১৩১০-১১ বঙ্গাব্দে ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়। নৌকাডুবি উপন্যাসটি লেখা হয়েছে জটিল পারিবারিক সমস্যাগুলিকে কেন্দ্র করে। ঘরানার দিক থেকে নৌকাডুবি রোমান্টিক ধাঁচের উপন্যাস। চিরায়ত সামাজিক উপন্যাসও বলা হয়ে থাকে। সামাজিক অসঙ্গতি, কুসংস্কার, দৃষ্টিভঙ্গি এর পরিবর্তে গল্পের উপজীব্য ছিলো ভাগ্যচক্র আর নিয়তির খেলা। মনের কুটিলতা, ষড়যন্ত্র, হিংসা-বিদ্বেষ এর জায়গায় ফুটে উঠেছে মানব-মানবী মনের আদিম এবং সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলো।

The post নৌকাডুবি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
চোখের বালি https://priyopathok.com/product/%e0%a6%9a%e0%a7%8b%e0%a6%96%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%bf-104/ Wed, 04 May 2022 16:42:19 +0000 https://priyopathok.com/?post_type=product&p=7711 আমার সাহিত্যের পথযাত্রা পূর্বাপর অনুসরণ করে দেখলে ধরা পড়বে যে ‘চোখের বালি’ উপন্যাসটা আকস্মিক, কেবল আমার মধ্যে নয়, সেদিনকার বাংলা সাহিত্যক্ষেত্রে। বাইরে থেকে কোন ইশারা এসেছিল আমার মনে, সে প্রশ্নটা দুরূহ। সব চেয়ে সহজ জবাব হচ্ছে ধারাবাহিক লম্বা গল্পের উপর মাসিক পত্রের চিরকেলে দাবি নিয়ে। বঙ্গদর্শনের নবদর্শনের নবপর্যায় বের করলেন শ্রীশচন্দ্র। আমার নাম যোজনা করা হল, তাতে আমার প্রসন্ন মনের সমর্থন ছিল না। কোনো পূর্বতন খ্যাতির উত্তরাধিকার গ্রহণ করা সংকটের অবস্থা, আমার মনে এ সম্বন্ধে যথেষ্ট সংকোচ ছিল। কিন্তু আমার মনে উপরোধ-অনুরোধের দ্বন্দ্ব যেখানেই ঘটেছে সেখানে প্রায়ই আমি জয়লাভ করতে পারি নি, এবারেও তাই হল।

আমরা একদা বঙ্গদর্শনে বিষবৃক্ষ উপন্যাসের রস সম্ভোগ করেছি। তখনকার দিনে সে রস ছিল নতুন। পরে সেই বঙ্গদর্শনকে নবপর্যায়ে টেনে আনা যেতে পারে কিন্তু সেই প্রথম পালার পুনরাবৃত্তি হতে পারে না। সেদিনের আসর ভেঙে গেছে, নতুন সম্পাদককে রাস্তার মোড় ফেরাতেই হবে। সহ-সম্পাদক শৈলেশের বিশ্বাসছিল, আমি এই মাসিকের বর্ষব্যাপী ভোজে গল্পের পুরো পরিমাণ জোগান দিতে পারি। অতএব কোমর বাঁধতে হবে আমাকে। এ যেন মাসিকের দেওয়ানি আইন-অনুসারে সম্পাদকের কাছ থেকে উপযুক্ত খোরপোশের দাবি করা। বস্তুত ফরমাশ এসেছিল বাইরে থেকে। এর পূর্বে মাহাকায় গল্প সৃষ্টিতে হাত দিই ন।ি ছোটো গল্পের উল্কাবৃদ্ধি করেছি। ঠিক করতে হল, এবারকার গল্প বানাতে হবে এ যুগের কারখানা-ঘরে। শয়তানের হাতে বিষবৃক্ষের চাষ তখনো হত এখনো হয়, তবে কিনা তার ক্ষেত্র আলাদা, অন্তত গল্পের এলাকার মধ্যে। এখনকার ছবি খুব স্পষ্ট, সাজসজ্জায় অলংকারে তাকে আচ্ছন্ন করলে তাকে ঝাপসা করে দেওয়া হয়, তার আধুনিক স্বভাব হয় নষ্ট। তাই গল্পের অবদান যখন এড়াতে পারলুম না তখন নামতে হল মনের সংসারের সেই কারখানা-ঘরে যেখানে আগুনের জ্বলুনি হাতুড়ির পিটুনি থেকে দৃঢ় ধাতুর মূর্তি জেগে উঠতে থাকে। মানববিধাতার এই নির্মম সৃষ্টিপ্রক্রিয়ার বিবরণ তার পূর্বে গল্প অবলম্বন করে বাংলা ভাষার আর প্রকাশ পায় নি। তার পরে এই পর্দার বাইরেকার সদর রাস্তাতেই ক্রমে ক্রমে দেখা দিয়েছে গোরা, ঘরে বাইরে, চতুরঙ্গ। শুধু তাই নয়, ছোটো গল্পের পরিকল্পনায় আমার লেখনী সংসারের রূঢ় স্পর্শ এড়িয়ে যায় নি। নষ্টনীড় বা শাস্তি, এরা নির্মম সাহিত্যের পর্যায়েই পড়বে। তার পরে পলাতকার কবিতাগুলির মধ্যেও সংসারের সঙ্গে সেই মোকাবিলার আলাপ চলেছে। বঙ্গদর্শনের নবপর্যায় এক দিকে তখন আমার মনকে রাষ্ট্রনৈতিক সমাজনৈতিক চিন্তার অবর্তে টেনে এনেছিল, আর-এক দিকে এনেছিল গল্পে, এমন কি কাব্যেও, মানবচরিত্রের কঠিন সংস্পর্শে। অল্পে অল্পে এর শুরু হয়েছিল সাধানার যুগেই, তার পরে সবুজপত্র পসরা জমিয়েছিল। চোখের বালির গল্পকে ভিতর থেকে ধাক্কা দিয়ে দারুণ করে তুলেছে মায়ের ঈর্ষা। এই ঈর্ষা মহেন্দ্রের সেই রিপুকে কুৎসিত অবকাশ দিয়েছে যা সহজ অবস্থায় এমন করে দাঁত নখ বের করত না। যেন পশুশালার দরজা খুলে দেওয়া হল, বেরিয়ে পড়ল সিংস্র ঘটনাগুলো অসংযত হয়ে। সাহিত্যের নবপর্যায়ের পদ্দতি হচ্ছে ঘটনাপরস্পরার বিবরণ দেওয়া নয়, বিশ্লেষণ করে তাদের আঁতের কথা বের করে দেখানো। সেই পদ্ধতিই দেখা দিল চোখে বালিতে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

The post চোখের বালি appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
আমার সাহিত্যের পথযাত্রা পূর্বাপর অনুসরণ করে দেখলে ধরা পড়বে যে ‘চোখের বালি’ উপন্যাসটা আকস্মিক, কেবল আমার মধ্যে নয়, সেদিনকার বাংলা সাহিত্যক্ষেত্রে। বাইরে থেকে কোন ইশারা এসেছিল আমার মনে, সে প্রশ্নটা দুরূহ। সব চেয়ে সহজ জবাব হচ্ছে ধারাবাহিক লম্বা গল্পের উপর মাসিক পত্রের চিরকেলে দাবি নিয়ে। বঙ্গদর্শনের নবদর্শনের নবপর্যায় বের করলেন শ্রীশচন্দ্র। আমার নাম যোজনা করা হল, তাতে আমার প্রসন্ন মনের সমর্থন ছিল না। কোনো পূর্বতন খ্যাতির উত্তরাধিকার গ্রহণ করা সংকটের অবস্থা, আমার মনে এ সম্বন্ধে যথেষ্ট সংকোচ ছিল। কিন্তু আমার মনে উপরোধ-অনুরোধের দ্বন্দ্ব যেখানেই ঘটেছে সেখানে প্রায়ই আমি জয়লাভ করতে পারি নি, এবারেও তাই হল।

আমরা একদা বঙ্গদর্শনে বিষবৃক্ষ উপন্যাসের রস সম্ভোগ করেছি। তখনকার দিনে সে রস ছিল নতুন। পরে সেই বঙ্গদর্শনকে নবপর্যায়ে টেনে আনা যেতে পারে কিন্তু সেই প্রথম পালার পুনরাবৃত্তি হতে পারে না। সেদিনের আসর ভেঙে গেছে, নতুন সম্পাদককে রাস্তার মোড় ফেরাতেই হবে। সহ-সম্পাদক শৈলেশের বিশ্বাসছিল, আমি এই মাসিকের বর্ষব্যাপী ভোজে গল্পের পুরো পরিমাণ জোগান দিতে পারি। অতএব কোমর বাঁধতে হবে আমাকে। এ যেন মাসিকের দেওয়ানি আইন-অনুসারে সম্পাদকের কাছ থেকে উপযুক্ত খোরপোশের দাবি করা। বস্তুত ফরমাশ এসেছিল বাইরে থেকে। এর পূর্বে মাহাকায় গল্প সৃষ্টিতে হাত দিই ন।ি ছোটো গল্পের উল্কাবৃদ্ধি করেছি। ঠিক করতে হল, এবারকার গল্প বানাতে হবে এ যুগের কারখানা-ঘরে। শয়তানের হাতে বিষবৃক্ষের চাষ তখনো হত এখনো হয়, তবে কিনা তার ক্ষেত্র আলাদা, অন্তত গল্পের এলাকার মধ্যে। এখনকার ছবি খুব স্পষ্ট, সাজসজ্জায় অলংকারে তাকে আচ্ছন্ন করলে তাকে ঝাপসা করে দেওয়া হয়, তার আধুনিক স্বভাব হয় নষ্ট। তাই গল্পের অবদান যখন এড়াতে পারলুম না তখন নামতে হল মনের সংসারের সেই কারখানা-ঘরে যেখানে আগুনের জ্বলুনি হাতুড়ির পিটুনি থেকে দৃঢ় ধাতুর মূর্তি জেগে উঠতে থাকে। মানববিধাতার এই নির্মম সৃষ্টিপ্রক্রিয়ার বিবরণ তার পূর্বে গল্প অবলম্বন করে বাংলা ভাষার আর প্রকাশ পায় নি। তার পরে এই পর্দার বাইরেকার সদর রাস্তাতেই ক্রমে ক্রমে দেখা দিয়েছে গোরা, ঘরে বাইরে, চতুরঙ্গ। শুধু তাই নয়, ছোটো গল্পের পরিকল্পনায় আমার লেখনী সংসারের রূঢ় স্পর্শ এড়িয়ে যায় নি। নষ্টনীড় বা শাস্তি, এরা নির্মম সাহিত্যের পর্যায়েই পড়বে। তার পরে পলাতকার কবিতাগুলির মধ্যেও সংসারের সঙ্গে সেই মোকাবিলার আলাপ চলেছে। বঙ্গদর্শনের নবপর্যায় এক দিকে তখন আমার মনকে রাষ্ট্রনৈতিক সমাজনৈতিক চিন্তার অবর্তে টেনে এনেছিল, আর-এক দিকে এনেছিল গল্পে, এমন কি কাব্যেও, মানবচরিত্রের কঠিন সংস্পর্শে। অল্পে অল্পে এর শুরু হয়েছিল সাধানার যুগেই, তার পরে সবুজপত্র পসরা জমিয়েছিল। চোখের বালির গল্পকে ভিতর থেকে ধাক্কা দিয়ে দারুণ করে তুলেছে মায়ের ঈর্ষা। এই ঈর্ষা মহেন্দ্রের সেই রিপুকে কুৎসিত অবকাশ দিয়েছে যা সহজ অবস্থায় এমন করে দাঁত নখ বের করত না। যেন পশুশালার দরজা খুলে দেওয়া হল, বেরিয়ে পড়ল সিংস্র ঘটনাগুলো অসংযত হয়ে। সাহিত্যের নবপর্যায়ের পদ্দতি হচ্ছে ঘটনাপরস্পরার বিবরণ দেওয়া নয়, বিশ্লেষণ করে তাদের আঁতের কথা বের করে দেখানো। সেই পদ্ধতিই দেখা দিল চোখে বালিতে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

The post চোখের বালি appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
শেষের কবিতা https://priyopathok.com/product/%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b7%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be-104/ Wed, 04 May 2022 16:42:19 +0000 https://priyopathok.com/?post_type=product&p=7712 শেষের কবিতা বিংশ শতকের বাংলার নবশিক্ষিত অভিজাত সমাজের জীবনকথা। ব্যক্তি মানুষের মূল্যচেতনার উপাদান যদি অন্তর থেকে শুধুই বার হয়ে আসতে থাকে - যার সমুন্নতি ও দীপ্তি বিদ্যার বৃহৎ পরিমার্জনায়, তারও একটা চরিত্র আছে। বাস্তব চেনাশোনার চলা বাহ্যিক অভিজ্ঞতার জগৎ থেকে তা একেবারে অন্তর অভিমুখী। এই নবতর চেতনার অদ্ভুত আবিষ্কার এই উপন্যাস রচনার কাছাকাছি সময়ে। রবীন্দ্রনাথের অঙ্কিত এই পর্বের দু-একটি মুখাবয়বে কল্পনার প্রাধান্য লক্ষণীয়।

লেখা ও প্রকাশের দিক থেকে শেষের কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দশম উপন্যাস। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এটি লেখেন ১৯২৮ সালে ব্যাঙ্গালোরে, স্বাস্থ্য উদ্ধারের প্রয়াসে সেখানে থাকবার সময়ে। শেষের কবিতা প্রথ ম প্রকাশিত হয় প্রবাসী’তে, ধারাবাহিকভাবে ভাদ্র থেকে চৈত্র পর্যন্ত। অনেকে একে কবিতার বই ভেবে ভুল করে। আদতে এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম রোমান্টিক উপন্যাস ।

The post শেষের কবিতা appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
শেষের কবিতা বিংশ শতকের বাংলার নবশিক্ষিত অভিজাত সমাজের জীবনকথা। ব্যক্তি মানুষের মূল্যচেতনার উপাদান যদি অন্তর থেকে শুধুই বার হয়ে আসতে থাকে – যার সমুন্নতি ও দীপ্তি বিদ্যার বৃহৎ পরিমার্জনায়, তারও একটা চরিত্র আছে। বাস্তব চেনাশোনার চলা বাহ্যিক অভিজ্ঞতার জগৎ থেকে তা একেবারে অন্তর অভিমুখী। এই নবতর চেতনার অদ্ভুত আবিষ্কার এই উপন্যাস রচনার কাছাকাছি সময়ে। রবীন্দ্রনাথের অঙ্কিত এই পর্বের দু-একটি মুখাবয়বে কল্পনার প্রাধান্য লক্ষণীয়।

লেখা ও প্রকাশের দিক থেকে শেষের কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দশম উপন্যাস। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এটি লেখেন ১৯২৮ সালে ব্যাঙ্গালোরে, স্বাস্থ্য উদ্ধারের প্রয়াসে সেখানে থাকবার সময়ে। শেষের কবিতা প্রথ ম প্রকাশিত হয় প্রবাসী’তে, ধারাবাহিকভাবে ভাদ্র থেকে চৈত্র পর্যন্ত। অনেকে একে কবিতার বই ভেবে ভুল করে। আদতে এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম রোমান্টিক উপন্যাস ।

The post শেষের কবিতা appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
চোখের বালি https://priyopathok.com/product/%e0%a6%9a%e0%a7%8b%e0%a6%96%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%bf-103/ Wed, 04 May 2022 16:41:36 +0000 https://priyopathok.com/?post_type=product&p=7642 আমার সাহিত্যের পথযাত্রা পূর্বাপর অনুসরণ করে দেখলে ধরা পড়বে যে ‘চোখের বালি’ উপন্যাসটা আকস্মিক, কেবল আমার মধ্যে নয়, সেদিনকার বাংলা সাহিত্যক্ষেত্রে। বাইরে থেকে কোন ইশারা এসেছিল আমার মনে, সে প্রশ্নটা দুরূহ। সব চেয়ে সহজ জবাব হচ্ছে ধারাবাহিক লম্বা গল্পের উপর মাসিক পত্রের চিরকেলে দাবি নিয়ে। বঙ্গদর্শনের নবদর্শনের নবপর্যায় বের করলেন শ্রীশচন্দ্র। আমার নাম যোজনা করা হল, তাতে আমার প্রসন্ন মনের সমর্থন ছিল না। কোনো পূর্বতন খ্যাতির উত্তরাধিকার গ্রহণ করা সংকটের অবস্থা, আমার মনে এ সম্বন্ধে যথেষ্ট সংকোচ ছিল। কিন্তু আমার মনে উপরোধ-অনুরোধের দ্বন্দ্ব যেখানেই ঘটেছে সেখানে প্রায়ই আমি জয়লাভ করতে পারি নি, এবারেও তাই হল।

আমরা একদা বঙ্গদর্শনে বিষবৃক্ষ উপন্যাসের রস সম্ভোগ করেছি। তখনকার দিনে সে রস ছিল নতুন। পরে সেই বঙ্গদর্শনকে নবপর্যায়ে টেনে আনা যেতে পারে কিন্তু সেই প্রথম পালার পুনরাবৃত্তি হতে পারে না। সেদিনের আসর ভেঙে গেছে, নতুন সম্পাদককে রাস্তার মোড় ফেরাতেই হবে। সহ-সম্পাদক শৈলেশের বিশ্বাসছিল, আমি এই মাসিকের বর্ষব্যাপী ভোজে গল্পের পুরো পরিমাণ জোগান দিতে পারি। অতএব কোমর বাঁধতে হবে আমাকে। এ যেন মাসিকের দেওয়ানি আইন-অনুসারে সম্পাদকের কাছ থেকে উপযুক্ত খোরপোশের দাবি করা। বস্তুত ফরমাশ এসেছিল বাইরে থেকে। এর পূর্বে মাহাকায় গল্প সৃষ্টিতে হাত দিই ন।ি ছোটো গল্পের উল্কাবৃদ্ধি করেছি। ঠিক করতে হল, এবারকার গল্প বানাতে হবে এ যুগের কারখানা-ঘরে। শয়তানের হাতে বিষবৃক্ষের চাষ তখনো হত এখনো হয়, তবে কিনা তার ক্ষেত্র আলাদা, অন্তত গল্পের এলাকার মধ্যে। এখনকার ছবি খুব স্পষ্ট, সাজসজ্জায় অলংকারে তাকে আচ্ছন্ন করলে তাকে ঝাপসা করে দেওয়া হয়, তার আধুনিক স্বভাব হয় নষ্ট। তাই গল্পের অবদান যখন এড়াতে পারলুম না তখন নামতে হল মনের সংসারের সেই কারখানা-ঘরে যেখানে আগুনের জ্বলুনি হাতুড়ির পিটুনি থেকে দৃঢ় ধাতুর মূর্তি জেগে উঠতে থাকে। মানববিধাতার এই নির্মম সৃষ্টিপ্রক্রিয়ার বিবরণ তার পূর্বে গল্প অবলম্বন করে বাংলা ভাষার আর প্রকাশ পায় নি। তার পরে এই পর্দার বাইরেকার সদর রাস্তাতেই ক্রমে ক্রমে দেখা দিয়েছে গোরা, ঘরে বাইরে, চতুরঙ্গ। শুধু তাই নয়, ছোটো গল্পের পরিকল্পনায় আমার লেখনী সংসারের রূঢ় স্পর্শ এড়িয়ে যায় নি। নষ্টনীড় বা শাস্তি, এরা নির্মম সাহিত্যের পর্যায়েই পড়বে। তার পরে পলাতকার কবিতাগুলির মধ্যেও সংসারের সঙ্গে সেই মোকাবিলার আলাপ চলেছে। বঙ্গদর্শনের নবপর্যায় এক দিকে তখন আমার মনকে রাষ্ট্রনৈতিক সমাজনৈতিক চিন্তার অবর্তে টেনে এনেছিল, আর-এক দিকে এনেছিল গল্পে, এমন কি কাব্যেও, মানবচরিত্রের কঠিন সংস্পর্শে। অল্পে অল্পে এর শুরু হয়েছিল সাধানার যুগেই, তার পরে সবুজপত্র পসরা জমিয়েছিল। চোখের বালির গল্পকে ভিতর থেকে ধাক্কা দিয়ে দারুণ করে তুলেছে মায়ের ঈর্ষা। এই ঈর্ষা মহেন্দ্রের সেই রিপুকে কুৎসিত অবকাশ দিয়েছে যা সহজ অবস্থায় এমন করে দাঁত নখ বের করত না। যেন পশুশালার দরজা খুলে দেওয়া হল, বেরিয়ে পড়ল সিংস্র ঘটনাগুলো অসংযত হয়ে। সাহিত্যের নবপর্যায়ের পদ্দতি হচ্ছে ঘটনাপরস্পরার বিবরণ দেওয়া নয়, বিশ্লেষণ করে তাদের আঁতের কথা বের করে দেখানো। সেই পদ্ধতিই দেখা দিল চোখে বালিতে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

The post চোখের বালি appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>
আমার সাহিত্যের পথযাত্রা পূর্বাপর অনুসরণ করে দেখলে ধরা পড়বে যে ‘চোখের বালি’ উপন্যাসটা আকস্মিক, কেবল আমার মধ্যে নয়, সেদিনকার বাংলা সাহিত্যক্ষেত্রে। বাইরে থেকে কোন ইশারা এসেছিল আমার মনে, সে প্রশ্নটা দুরূহ। সব চেয়ে সহজ জবাব হচ্ছে ধারাবাহিক লম্বা গল্পের উপর মাসিক পত্রের চিরকেলে দাবি নিয়ে। বঙ্গদর্শনের নবদর্শনের নবপর্যায় বের করলেন শ্রীশচন্দ্র। আমার নাম যোজনা করা হল, তাতে আমার প্রসন্ন মনের সমর্থন ছিল না। কোনো পূর্বতন খ্যাতির উত্তরাধিকার গ্রহণ করা সংকটের অবস্থা, আমার মনে এ সম্বন্ধে যথেষ্ট সংকোচ ছিল। কিন্তু আমার মনে উপরোধ-অনুরোধের দ্বন্দ্ব যেখানেই ঘটেছে সেখানে প্রায়ই আমি জয়লাভ করতে পারি নি, এবারেও তাই হল।

আমরা একদা বঙ্গদর্শনে বিষবৃক্ষ উপন্যাসের রস সম্ভোগ করেছি। তখনকার দিনে সে রস ছিল নতুন। পরে সেই বঙ্গদর্শনকে নবপর্যায়ে টেনে আনা যেতে পারে কিন্তু সেই প্রথম পালার পুনরাবৃত্তি হতে পারে না। সেদিনের আসর ভেঙে গেছে, নতুন সম্পাদককে রাস্তার মোড় ফেরাতেই হবে। সহ-সম্পাদক শৈলেশের বিশ্বাসছিল, আমি এই মাসিকের বর্ষব্যাপী ভোজে গল্পের পুরো পরিমাণ জোগান দিতে পারি। অতএব কোমর বাঁধতে হবে আমাকে। এ যেন মাসিকের দেওয়ানি আইন-অনুসারে সম্পাদকের কাছ থেকে উপযুক্ত খোরপোশের দাবি করা। বস্তুত ফরমাশ এসেছিল বাইরে থেকে। এর পূর্বে মাহাকায় গল্প সৃষ্টিতে হাত দিই ন।ি ছোটো গল্পের উল্কাবৃদ্ধি করেছি। ঠিক করতে হল, এবারকার গল্প বানাতে হবে এ যুগের কারখানা-ঘরে। শয়তানের হাতে বিষবৃক্ষের চাষ তখনো হত এখনো হয়, তবে কিনা তার ক্ষেত্র আলাদা, অন্তত গল্পের এলাকার মধ্যে। এখনকার ছবি খুব স্পষ্ট, সাজসজ্জায় অলংকারে তাকে আচ্ছন্ন করলে তাকে ঝাপসা করে দেওয়া হয়, তার আধুনিক স্বভাব হয় নষ্ট। তাই গল্পের অবদান যখন এড়াতে পারলুম না তখন নামতে হল মনের সংসারের সেই কারখানা-ঘরে যেখানে আগুনের জ্বলুনি হাতুড়ির পিটুনি থেকে দৃঢ় ধাতুর মূর্তি জেগে উঠতে থাকে। মানববিধাতার এই নির্মম সৃষ্টিপ্রক্রিয়ার বিবরণ তার পূর্বে গল্প অবলম্বন করে বাংলা ভাষার আর প্রকাশ পায় নি। তার পরে এই পর্দার বাইরেকার সদর রাস্তাতেই ক্রমে ক্রমে দেখা দিয়েছে গোরা, ঘরে বাইরে, চতুরঙ্গ। শুধু তাই নয়, ছোটো গল্পের পরিকল্পনায় আমার লেখনী সংসারের রূঢ় স্পর্শ এড়িয়ে যায় নি। নষ্টনীড় বা শাস্তি, এরা নির্মম সাহিত্যের পর্যায়েই পড়বে। তার পরে পলাতকার কবিতাগুলির মধ্যেও সংসারের সঙ্গে সেই মোকাবিলার আলাপ চলেছে। বঙ্গদর্শনের নবপর্যায় এক দিকে তখন আমার মনকে রাষ্ট্রনৈতিক সমাজনৈতিক চিন্তার অবর্তে টেনে এনেছিল, আর-এক দিকে এনেছিল গল্পে, এমন কি কাব্যেও, মানবচরিত্রের কঠিন সংস্পর্শে। অল্পে অল্পে এর শুরু হয়েছিল সাধানার যুগেই, তার পরে সবুজপত্র পসরা জমিয়েছিল। চোখের বালির গল্পকে ভিতর থেকে ধাক্কা দিয়ে দারুণ করে তুলেছে মায়ের ঈর্ষা। এই ঈর্ষা মহেন্দ্রের সেই রিপুকে কুৎসিত অবকাশ দিয়েছে যা সহজ অবস্থায় এমন করে দাঁত নখ বের করত না। যেন পশুশালার দরজা খুলে দেওয়া হল, বেরিয়ে পড়ল সিংস্র ঘটনাগুলো অসংযত হয়ে। সাহিত্যের নবপর্যায়ের পদ্দতি হচ্ছে ঘটনাপরস্পরার বিবরণ দেওয়া নয়, বিশ্লেষণ করে তাদের আঁতের কথা বের করে দেখানো। সেই পদ্ধতিই দেখা দিল চোখে বালিতে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

The post চোখের বালি appeared first on প্রিয় পাঠক.

]]>